© 2025 Pawn Power Bangladesh All rights reserved.
© 2025 Pawn Power Bangladesh All rights reserved.
বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ মহিলা ক্যান্ডিডেট মাস্টার এখন ওয়ারিসা হায়দার (সারা)। মাত্র ১০ বছর বয়সে সারা এই আন্তর্জাতিক খেতাব অর্জন করেন। এই সম্ভাবনাময়ী ক্ষুদে দাবাড়ু গত বছর শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত ওয়েস্টার্ন এশিয়ান ইয়ুথ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের বালিকা বিভাগে (অনূর্ধ্ব-৮) তৃতীয় স্থান হওয়ার গৌরব অর্জন করেন, যার কারনেই তার এই টাইটেল পাওয়া।
শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত ওয়েস্টার্ন এশিয়ান ইউথ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে বালিকা বিভাগে( অনূর্ধ্ব ৮) তৃতীয় পুরস্কার হাতে দাঁড়িয়ে সারা
তবে, নিয়মানুযায়ী, তার রেটিং ১৮০০ না হওয়ায় তিনি এই খেতাব পাননি। ২০২৫ সালের জুলাইয়ে ফিদে (FIDE) রেটিং তালিকায় তার রেটিং ১৮০০ পৌঁছানোয় অবশেষে তিনি এই খেতাব অর্জন করেন। সারা তাঁর দাবাপাগল বাবা মোস্তফা হায়দারের দ্বিতীয় কন্যা।বাবার হাত ধরেই তার দাবার জগতে প্রবেশ। সারা ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে পড়াশোনা করছেন। মাত্র ছয় বছর বয়সে তিনি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে দাবা ক্যারিয়ার শুরু করেন এবং জাতীয় অনূর্ধ্ব-৮ ইয়ুথ থেকে শুরু করে অনূর্ধ্ব-১০ জাতীয় ইয়ুথ দাবায় প্রায় প্রতিটা প্রতিযোগিতায় একক আধিপত্য বিস্তার করে জয়ী হন।
মার্ক্সস এ্যাক্টিভ স্কুল দাবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেমুলটেনিয়াস দাবায় গ্রান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশদের সাথে ড্র করে সবার নজর কাড়ে সারা
এছাড়াও সারা জাতীয় পর্যায়ে আয়োজিত স্কুল ও বয়সভিত্তিক দাবা প্রতিযোগিতায় অনেক শিরোপা জিতেছেন। গত বছর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এশিয়ান স্কুল দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে ওয়ারিশা নিজেকে অনন্য উচ্চতায় মেলে ধরেন। অল্পের জন্য মেডেল হাতছাড়া করলেও সারা টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে চতুর্থ স্থান অর্জন করেন এবং জানান দেন তিনি হতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় মহিলা খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন।
বাবা মোস্তফা হায়দারের কোলে ছোট সারা
সারার বাবা মোস্তফা হায়দার একজন আন্তর্জাতিক রেটিংপ্রাপ্ত দাবাড়ু এবং বিভিন্ন দাবা ক্লাবের সাংগঠনিক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি নিজ খরচে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় মেয়েকে খেলতে পাঠান। সারার খেলা চলাকালীন সময় তার বাবার উৎকণ্ঠা ও আবেগ দেখলেই বোঝা যায় দাবার প্রতি তার কতটা ভালোবাসা। প্রতিটি চালে যেন তার মুখে উত্তেজনার ভাঁজ পড়ে। সারা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের দাবার একজন সম্ভাবনাময় ও প্রতিভাবান মহিলা দাবাড়ু। তার বাবা তাকে একজন পেশাদার দাবাড়ু হিসেবে গড়ে তুলছেন। সারা পন পাওয়ার চেস ক্লাবে অ্যাডভান্স লেভেলের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন এবং দেশি-বিদেশি কোচের কাছ থেকে ব্যক্তিগত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। তার বাবা বিশ্বমানের দাবাড়ুদের প্র্যাকটিস রুমের আদলে ওয়ারিশার জন্য একটি প্র্যাকটিস রুম তৈরি করেছেন।
দাবার বাইরেও মেধাবি সারা।ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অনুষ্ঠিত আলোহা প্রতিযোগিতায় পুরস্কার হাতে সারা
কোচ থেকে শুরু করে পেশাদার দাবাড়ু হওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন, তার বাবা সাধ্যমতো সবকিছুই করার চেষ্টা করছেন।হয়তো মোস্তফা হায়দার নিজে একজন বিখ্যাত দাবাড়ু হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বিভিন্ন বাস্তবতায় তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে তিনি তার মেয়েকে এমনভাবে গড়ে তুলছেন যাতে সে একজন বিশ্বমানের দাবাড়ু হতে পারে। বাংলাদেশে পাঁচজন পুরুষ গ্র্যান্ডমাস্টার থাকলেও এখনো কোনো মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার নেই। সারা কি সেই আক্ষেপ ঘুচাতে পারবেন? সেটা সময়ই বলে দেবে।
মা জান্নাতুল ফেরদৌস এ্যানির সাথে সারা ও তার ছোট বোন
সারার মা জান্নাতুল ফেরদৌস এ্যানি দাবা না বুঝলেও মেয়ের দাবা ক্যারিয়ারের জন্য স্যাক্রিফাইস নিজের ব্যক্তিগত জীবনের স্বাচ্ছন্দ কে। তিনি তার ছোট মেয়েকেও দাবা শিখিয়েছেন, এবং নিজে দাবা না খেললেও তার দাবার প্রতি গভীর ভালোবাসা রয়েছে। সারার স্বপ্ন মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া। আমরা আশা করি, ওয়ারিশার সাফল্য শুধু দেশে নয় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ব মঞ্চেও দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।
সারা ও তার বোন আলিশা খেলছেন একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে